পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউএনও ও মডেল থানার ওসির মোবাইল নম্বর ক্লোন করে চাঁদা দাবি ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলার ৭নং দেবনগর মোটর সাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মহসীন উল হক ২০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এঘটনা নাম্বার ক্লোন করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানার পর উপজেলার উপজেলার সকল নির্বাচনী চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ও সাধারণ জনগণকে টাকা লেনদেনে সচেতন মুলক প্রচার করেছেন প্রশাসন।
গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের ফোন দেয় হ্যাকাররা। ফোনে প্রতারকরা ইউএনও কিংবা থানার ওসি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবি করেন বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
আগামী ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী তারেক হোসেন, ভজনপুর ইউনিয়নে মকসেদ আলী, দেবনগড় ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ ডাবলু, তরিকুল ইসলাম ও মহসিনুল হককে ফোন দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করলে তারা বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করেন বলে জানিয়েছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী দেবনগর ইউপির চেয়ারম্যান মহসীন উল হক জানান, আমি দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্ধিতা করছি। শনিবার সকালে একটি নম্বর থেকে মোবাইলে কল আসে। দেখি থানার ওসির নম্বর। রিসিভ করলে তিনি থানার ওসি পরিচয় দিয়ে একজন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে কথা বলতে বলেন। তার সাথে কথা বললে ব্যস্ততা দেখিয়ে একটি পারসোনাল নম্বরে ২০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিতে বলেন।
এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মহকিনিল হক বলেন, আমি বিষয়টি ততোটা বুঝতে না পেরে একজনকে দিয়ে বাজারের এক দোকানে গিয়ে ২০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেয়ার পর জানতে পারি প্রতারণার শিকার হয়েছি। কী কারনে ও কোন প্রলোভনে টাকা দিলেন বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি খোলাসা না করে এড়িয়ে যান।
রবিবার দুপুরে দেবনগর ইউনিয়নের মাগুড়মারী চৌরাস্তার বিকাশ দোকানদার সিদ্দিকের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, সকালে আমার কাছে চেয়ারম্যান সাহেবের লোক এসে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বললে আমি পাঠিয়ে দেই।
এ বিষয়ে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া বলেন, ওই প্রতারক চক্র অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে ইউপি নির্বাচনে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। এর পর প্রার্থীরা বিষয়টি এড়িয়ে গেলে ইউএনও'সহ পুনরায় থানায় অবহিত করে। পরে সকল নির্বাচনী প্রার্থীকে টাকা লেনদেনে সচেতন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে কোন প্রার্থী টাকা দিয়েছেন কীনা জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, এ ঘটনার পর থেকে সকলকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শুধু আমার (ইউএনও) ও ওসির ফোন নাম্বারই না, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীগণকে এসিল্যান্ড, রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারের নাম্বার ক্লোন করে অর্থ দাবী করা হচ্ছে। মূলত একটি প্রতারক চক্র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই প্রতারণা শুরু করেছে। তাই এ বিষয়ে কোনরূপ আর্থিক লেনদেন না করার জন্য এবং সতর্ক থাকার জন্য ফেসবুক পোষ্টসহ সকলকে জানানো হয়েছে। আশাকরি সকলে এ বিষয়ে সচেতন থাকবে।
ফাহিম / একটিভ নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :