এক গবেষণায় ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। ওই গবেষণায় পাওয়া তথ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত হয়। জার্নালে বলা হয়, ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগের ছয় সপ্তাহ পর অ্যান্টিবডির স্তর ৪ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং ০ দশমিক ৪১ শতাংশ কমেছে। ১০ সপ্তাহ পর দেখা যায়, অ্যান্টিবডির স্তর কমেছে ৫০ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের ইউসিএল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইনফরম্যাটিপের মধুমিতা শ্রোত্রি এ বিষয়ে বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজার টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা প্রাথমিকভাবে খুব বেশি থাকে, যা গুরুতর করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষাবলয় তৈরি করে রাখে। তবে চিন্তার কারণ হলো, এই অ্যান্টিবডির মাত্রা দু-তিন মাস পর কমতে শুরু করে।
এর আগে গবেষকরা ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের ৬০০ জনের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
এদিকে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) গবেষকরা এ বিষয়ে বলেছেন, অ্যান্টিবডির স্তরগুলো যদি এই হারে কমতে থাকে তবে টিকাগুলোর প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবগুলোও ক্ষয় হতে শুরু করবে, বিশেষত করোনার নতুন ধরনগুলোর বিরুদ্ধে। তবে কত তাড়াতাড়ি অ্যান্টিবডি স্তর কমতে পারে তা আগাম বলা সম্ভব নয়।
গবেষকরা আরও বলেন, ভারতে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুটি শটের চেয়ে ফাইজার টিকার দুটি ডোজের পর অ্যান্টিবডি স্তরগুলো বেশি পরিমাণে তৈরি হয়েছে। সার্স-কোভ-২তে আক্রান্তদের তুলনায় টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের শরীরে অ্যান্টিবডির স্তর অনেক বেশি।
ইউসিএল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইনফরম্যাটিপের অধ্যাপক রব অলড্রিজ এ বিষয়ে বলেন, যখন আমরা বুস্টার ডোজগুলোর জন্য কাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত সে সম্পর্কে গবেষণা চালাচ্ছি, তখন দেখা যাচ্ছে যারা আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন তাদের দেহে অ্যান্টিবডির স্তর সবচেয়ে কম। এই অনুসন্ধান দেখে গবেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি বা যারা শারীরিকভাবে দুর্বল, তাদের বুস্টার ডোজ নেওয়া উচিত।
গবেষকরা আরও বলেছেন, বিভিন্ন মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই টিকা নেওয়ার পর প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে গড়ে উঠবে সেটাও নির্ভর করে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর। এমনকি অ্যান্টিবডি স্তর কম থাকলেও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক দিন ধরে দেহকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দিতে পারে।
সূত্র: সমকাল
রেজাউল করিম / একটিভ নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :