সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে বিক্ষোভ বাড়ছেই। প্রতিদিন বিক্ষেভে যুক্ত হচ্ছেন দেশটির হাজারো মানুষ। পুলিশও হয়ে উঠছে মারমুখী। তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে।
সোমবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনসহ অন্যান্য শহর-নগরের রাস্তায় নেমেছেন হাজারো বিক্ষোভকারী। এই নিয়ে তাঁরা টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন। সেনাশাসনের অবসানের পাশাপাশি অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নানা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করছেন। এসব ব্যানার-প্ল্যাকার্ড লেখা রয়েছে ‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও’, ‘আমাদের ভোটারদের সম্মান দেখাও’, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করো’, ‘সেনা অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান করো’, ‘স্বৈরতন্ত্রকে “না” বলো’ প্রভৃতি।
আরো পড়ুন : ৯৯৯ এ কল: অসুস্থ্য ছাত্রীর জন্য ইনহেলার নিয়ে গেল পুলিশ
বিক্ষোভের উদ্যোক্তারা সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে জনসাধারণকে দলে দলে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন। জনতার উদ্দেশ্যে এক আন্দোলনকারী বলেছেন, ‘ইয়াঙ্গুনের সব প্রান্ত থেকে রাস্তায় নামুন। শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে অংশ নিন। জনগণের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিন।’
মিয়ানমারের অধিকাংশ স্থানেই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে রাজধানী নেপিডো থেকে পুলিশের মারমুখী আচরণের খবর এসেছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান দিয়ে পানি ছোড়ে পুলিশ। পুলিশের এই পদক্ষেপে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। পুলিশের এমন তৎপরতা সত্ত্বেও বিক্ষোভ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘সোমবার থেকে কাজে যোগ না দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের সব কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টমাস অ্যান্ড্রুজ এক টুইটে বলেছেন, দেশজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ও আটক রাজনীতিকদের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমার জেগে উঠেছে।
আরো পড়ুন : নিজের ছবিকে স্বামীর প্রেমিকা ভেবে ছুরিকাঘাত, স্ত্রী আটক
গতকাল রোববার মিয়ানমারে লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেন। দেশটির বিভিন্ন শহর-নগরের সড়কগুলো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ২০০৭ সালের পর এমন বিক্ষোভ আর দেখেনি দেশটির মানুষ।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। সামরিক বাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনীতিক নেতাদের আটক-গ্রেপ্তার করেছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিক্ষোভ দানা বাঁধে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশটির সেনাবাহিনী ফেসবুক ও টুইটারের পর ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটির মানুষ সেনাশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসেন।
আপনার মতামত লিখুন :