করোনাভাইরাসের টিকা কেনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে যে ‘অতিরিক্ত অর্থ’ দাবি করছিল, এর বেশির ভাগ বাদ দিয়ে গতকাল রবিবার ৭৩৬ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে টিকা কেনার জন্য যাঁরা কাজ করবেন, তাদের আপ্যায়ন খরচ বাবদ চাওয়া ৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার মতো আরো কিছু ‘অস্বাভাবিক’ খরচের হিসাব।
অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে টিকা কেনার অর্থের জন্য যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তা ‘অস্বাভাবিক’। কারণ কিছু খাতে ব্যয়ের কোনো প্রয়োজনই নেই। এর পরও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ তাতে অর্থ দাবি করেছে। আবার কিছু খাতে অর্থ দাবি আমাদের কাছে অতিরিক্ত মনে হয়েছে।
আমরা সব কিছু যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড় করতে অনুমোদন দিয়েছি।’
আরো পড়ুন: চালকদের চা-বিস্কুট খাইয়ে 'মহামূল্যবান ঘুষ' নিচ্ছে পুলিশ!
এর আগে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ টিকা কিনতে এক হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি করেছিল। এর মধ্যে করোনার টিকা কেনার জন্য যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের আপ্যায়ন ব্যয়ের বরাদ্দ চাওয়া হয় ৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় মনে করছে, এই টাকা চাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যার ফলে এই খাতে কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ টিকার জন্য প্রচার ও বিজ্ঞাপন দিতে ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা চেয়েছে। অর্থ বিভাগ এই খাতেও কোনো টাকা দেয়নি।
টিকা কিনতে ভ্রমণ ব্যয় বাবদ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ছয় কোটি ৭৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা চেয়েছে। অর্থ বিভাগ এই ক্ষেত্রে কোনো টাকা দেয়নি। স্বাস্থ্যবিধান সামগ্রী কিনতে তিন কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা চেয়েছিল বিভাগটি। কোনো টাকা দেয়নি অর্থ বিভাগ।
আরো পড়ুন: আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মাথায় ডিম ফাটাল বিক্ষোভকারীরা!
অন্যদিকে পণ্যের ভাড়া ও পরিবহন ব্যয় বাবদ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৯৩ কোটি ৩০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা দাবির বিপরীতে অর্থ বিভাগ মাত্র দুই কোটি ৯৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা অনুমোদন দিয়েছে।
টিকা কিনতে জরিপ চালানোর জন্য ৯৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। অর্থ বিভাগ এতেও সম্মতি দেয়নি।
সব মিলিয়ে গতকাল ৭৩৫ কোটি ৭৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
প্রসঙ্গত, সরকার দেশের মানুষকে টিকা দিতে এরই মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেলে তা বাংলাদেশের মানুষও পাবে। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে সেরাম ইনস্টিটিউট।