হবিগঞ্জে ১৫ দিনের সন্তানকে মাত্র ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন মা-বাবা। শনিবার (৯ই জানুয়ারি) বিকেলে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় সন্তানকে মায়ের কাছে ফেরত দিয়েছেন কিনে নেয়া দম্পতি।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায় যে, জেলার বানিয়াচং উপজেলার মন্দরি গ্রামে রহিম উদ্দিনের স্ত্রী আকলিমা বেগম ৮ জানুয়ারি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি হন। এ সময় চিকিৎসকরা জানান ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। পরে নবজাতক কন্যার বাবা রহিম উদ্দিন টাকার অভাবে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারায় সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে সন্তান কিনতে রাজি হন একই ওয়ার্ডে রোগী নিয়ে আসা নবীগঞ্জ উপজেলার ওয়াখাল চরগাঁও গ্রামের আছকির মিয়া।
এ সময় তিনি নবজাতকটি কিনতে ৬ হাজার টাকা দেন রহিম-আকলিমা দম্পতিকে।
নবজাতকের বাবা রহিম উদ্দিন বলেছেন, ১৫ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর আগেও তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। সম্প্রতি তার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হলে ৮ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকরা জানান তার স্ত্রীর জন্য ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারায় স্ত্রীকে বাঁচাতে সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
আরো পড়ুন: নায়িকা হতে এসে গণধর্ষণের শিকার তরুণী
নবজাতকের মা আকলিমা বেগম বলেছেন, টাকার জন্য নিজের চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। মা-বাবা, ভাই-বোনসহ আত্মীয় স্বজনের কাছে ঘুরেও টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি। যে কারণে সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ ঘটনাস্থেলে পৌঁছে কিনে নেয়া দম্পতির সাথে যোগাযোগ করে বাচ্চাকে ফিরিয়ে আনেন। পরে শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় শিশুটিকে তার মা বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
আরো পড়ুন: রোহিত শর্মাকে নিয়ে বাজিতে হেরে অর্ধেক গোঁফ কাটলেন তিনি
ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধারক হেলাল উদ্দিন বলেন, হাসপাতাল থেকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু সন্তান বিক্রির বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।
জানার পর পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।